I tapu Zafar Iqbal
আমি তপু মুহম্মদ জাফর ইকবাল রচিত একটি কিশোর উপন্যাস যা ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পার্ল পাব্লিকেশন্স থেকে প্রকাশিত হয়
আমি তপু গল্পের শুরু হয় আরিফুল ইসলাম তপুর নামে একজন কিশোরের নিজ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। এক দুর্ঘটনায় তপু তার বাবাকে হারায় এবং তা মূলতঃ ছেলেটির গোটা জীবনটাকেই উলটপালট করে দেয়। স্বামীর মৃত্যুতে তপুর মা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং স্বামীর মৃত্যুর জন্য নিজের ছেলে তপুকেই দোষারোপ করতে থাকে। ফলে তপুর জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। নিজের মায়ের কাছ থেকেই নিগৃহতার শিকার হতে থাকে সে। মায়ের ভয়ে তপুর বড় ভাই রাজীব এবং বড় বোন ঈশিতাও তপুর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। শুধুমাত্র বাসার কাজের মহিলা দুলি খালাই তপুর প্রতি সহানুভূতিশীল আচরন করে। ক্রমেই এক সময়ের মেধাবী ছাত্র তপুর অবস্থা শোচনীয় রূপ নেয়। নিজের বাড়িতে কাজের ছেলের মত থাকে সে, স্কুলে হয়ে যায় সবচেয়ে খারাপ ছেলে আর রাস্তাঘাটে যাকে দেখলে খুব সহজেই চিহ্নিত করা যায় বখাটে হিসেবে। এভাবেই যখন তপুর জীবন ক্রমে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছিল তখন আগমন ঘটে প্রিয়াংকা নামের একটি মেয়ের। ক্লাসে নতুন আসা মেয়েটি তপুর বন্ধু হয়ে ওঠার চেষ্টা চালাতে থাকে। তপু যখন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, প্রিয়াংকাই তাকে ফিরিয়ে আনে। এরপর প্রিয়াংকার সান্নিধ্যে এসে তপু ধীরে ধীরে আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে থাকে। প্রিয়াংকা তাকে সাহায্য করে তার প্রতিভার সঠিক বিকাশ ঘটিয়ে পৃথিবীর কাছে প্রমাণ করতে যে তপু কোন ফেলনা ছেলে নয়, সে আসলে একটা জিনিয়াস। প্রিয়াঙ্কার মাধ্যমে তপু গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেয় এবং দেশের বাঘা-বাঘা গণিতবিদদের তাক লাগিয়ে দেয় জটিল সমস্যার সমাধান করে। স্বয়ং প্রেসিডেন্ট তপুকে স্বর্ণপদক দিলেও পরিবারের সদস্যদের উপর তা কোন প্রভাব ফেলে না। বাড়িতে মায়ের কাছে সে সেই ঘৃণার পাত্রই রয়ে যায়। কিন্তু কাহিনীর শেষ পর্যায়ে এসে আবারো মায়ের সাথে তপুর পুনর্মিলন ঘটে, কিন্তু সে বড় অদ্ভুত এক পরিস্থিতিতে - যা ছিল তপুর জন্যে একই সাথে বড্ড আনন্দের আবার বড্ড দুঃখের।